আল্লাহর কুদরতের এক মহাবিস্ময় যমযম কূপ

Estimated read time 1 min read
Spread the love

ডেস্ক নিউজ॥

আল্লাহর কুদরতের বিস্ময়কর নিদর্শন হলো যমযমের পানি। এ পানি যেমন পবিত্র, তেমনি বরকতময় ও সুস্বাদু। যমযমের পানি পানে শুধু তৃষ্ণাই মিটে না; বরং ক্ষুধা নিবারণ হয়, রোগবালাই থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। হজরত রাসূল (সা.) সব সময় যমযমের পানি সঙ্গে রাখতেন। তিনি নিজে যমযমের পানি পান করতে পছন্দ করতেন। রোগ-বিমারের দাওয়াই হিসাবে অন্যদের যমযমের পানি পান করতে বলতেন। হজরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, ‘হজরত রাসূল (সা.) যমযমের পানি পান করতেন। সফরে বের হলে যমযমের পানি সঙ্গে রাখতেন। এ পানি অসুস্থদের ওপর ছিটিয়ে দিতেন এবং তাদের পান করাতেন।’।

পবিত্র কাবা ঘর থেকে মাত্র ২১ মিটার দক্ষিণ পূর্বে যমযম কূপের অবস্থান। ইতিহাস বলছে, আজ থেকে প্রায় ৪০০০ বছর পূর্বে হজরত ইবরাহিম (আ.) মহান আল্লাহর নির্দেশে নিজের স্ত্রী হাজেরা (আ.) এবং শিশুপুত্র ইসমাইল (আ.)কে মক্কার এক জনমানবহীন স্থানে ফারান পাহাড়ের পাদদেশে নির্বাসন দেন। হজরত ইবরাহিম (আ.) প্রিয়তমা স্ত্রী ও শিশুপুত্রকে বিরান মরুভূমির পাহাড়ের পাদদেশে রেখে সামান্য আহার সামগ্রী সঙ্গে দিয়ে ফেরত চলে আসেন। ওই সময়কালে আল্লাহতায়ালা ছাড়া বিবি হাজেরা (আ.) এবং হজরত ইসমাঈল (আ.)-এর আশপাশে দ্বিতীয় কেউ ছিল না। হজরত ইবরাহিম (আ.) এর রেখে যাওয়া সামান্য আহার সামগ্রী শেষ হয়ে যাওয়ার পর কোনো এক সময় হজরত ইসমাইল (আ.) পানির পিপাসায় কান্নাকাটি করতে থাকেন। বিবি হাজেরা শিশুপুত্রের তৃষ্ণা নিবারণের জন্য পানির খোঁজে চারদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন।

বিবি হাজেরা (আ.) পানির খোঁজে সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তে সাতবার ছোটাছুটি করেছেন। কোথাও কোনো পানির সন্ধান পাননি। অবশেষে পানির খোঁজে ব্যর্থ হয়ে শিশুপুত্রের কাছে ফিরে আসেন। হঠাৎ করে বিবি হাজেরা দেখতে পান, শিশুপুত্রের পায়ের গোড়ালির ঘষাতে আল্লাহর হুকুমে নিচ থেকে পানি উঠছে। এবং একটি ঝর্ণার সৃষ্টি হচ্ছে। এ ঝর্ণাটি পরে যমযম কূপ হিসাবে পরিচিতি লাভ করে।

আল্লাহতায়ালার বিস্ময়কর নিদর্শন এ কূপের পানি উত্তোলন শেষে, মাত্র ১১ মিনিটে কূপটি পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। যমযম কূপের সৃষ্টি থেকে আজও পানির স্বাদ, গন্ধ ও গুণাগুণের কোনো পরিবর্তন হয়নি। যমযমের পানিতে ফু¬রাইডের পরিমাণ বেশি থাকায়, এ পানিতে কোনো জীবাণু জন্মাতে পারে না। আজ পর্যন্ত যমযমের পানিতে একটি ছত্রাক কিংবা শৈবালও জন্মায়নি। অলৌকিকভাবে যমযমের পানি পরিশোধন হয়ে যায়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা যমযম কূপের পানি রহস্যে উদঘাটনের জন্য গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু কোনো কূল-কিনারা করতে পারছেন না। যমযমের পানি সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিস এবং বর্ণনায় এসেছে, যে উদ্দেশ্যে নিয়ে যমযমের পানি পান করবে, আল্লাহতায়ালা ওই ব্যক্তির ইচ্ছা পূরণ করে দেন।

About The Author


Spread the love

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours