অনলাইন ডেস্ক॥
ঔষধি ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ বিদেশি জাতের ‘ব্ল্যাক রাইস’ বা কালো ধান চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন রংপুরের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা মিলন রায়। ২০ শতাংশ জমিতে তিনি এ ধান চাষ করেছেন। ফলনও বাম্পার হয়েছে। বিদেশি জাতের এই ধান উচ্চ ফলনশীল বলে সবার মাঝেই আগ্রহ বাড়ছে। কৃষি বিজ্ঞানীদের মতে,‘ব্ল্যাক রাইস’ ঔষধি ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ। এই ধানে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এতে থাকা ফাইবার হার্টকে সুস্থ রাখে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া এ ধানের চালে রয়েছে ডায়াবেটিস, স্নায়ুরোগ ও বার্ধক্য প্রতিরোধ ক্ষমতা। রংপুর মহানগরের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা মিলন রায় ইউটিউবে প্রথম এ ধানের চাষাবাদ সম্পর্কে জানেন। পরে ৫০০ টাকা দিয়ে পঞ্চগড় থেকে ২ কেজি বীজ কিনেছিলেন।
জানা গেছে, ব্ল্যাক রাইস ধানের উৎপত্তি ইন্দোনেশিয়ায়। অধিক ঔষধি গুণ থাকায় এক সময় চীনের রাজা-বাদশাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য গোপনে এই ধান চাষ করা হতো। যা প্রজাদের জন্য চাষ করা বা খাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। এ কারণে এই ধানকে নিষিদ্ধ ধানও বলা হতো।
পরবর্তীতে জাপান ও মিয়ানমারে এই ধান চাষ শুরু হয়। সেখান থেকে আসে বাংলাদেশে। পার্বত্য এলাকায় এ চালকে বলা হয় পোড়া বিন্নি চাল। থাইল্যান্ডে একে বলে কাও নাইও ডাহম।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, বিদেশি জাতের ধান এই এলাকায় প্রথম চাষ হচ্ছে। অল্প টাকা ও কম পরিশ্রমে ধান ভালোই হয়েছে। এলাকার অনেকেই এই ধান চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
একই এলাকার আরেক কৃষক বলেন, কালো ধান দেখতে দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই আসছে। ফলন তো ভালো হয়েছে। এ ধানে সার ও কীটনাশক কম লাগে। বীজ সংগ্রহ করতে পারলে আগামীতে তিনিও কালো ধান আবাদ করবেন বলে জানিয়েছেন।
জানা গিয়েছে, ব্ল্যাক রাইসকে স্বাভাবিক ধানের মতোই পরিচর্যা করতে হয়। অতিরিক্ত কোনো পরিচর্যার প্রয়োজন না হলেও অন্য ধানের তুলনায় অধিক লাভবান হওয়া যাবে। এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করেছেন তিনি। তবে তিনি বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করা গেলে বেশ ভালো হবে।
এই ধান চাষে কম খরচে কয়েকগুণ লাভ হয়। সাধারণ জাতের ধান প্রতি বিঘাতে যেখানে ১৮ থেকে ২০ মণ উৎপাদন হয় সেখানে কালো ধান প্রতি বিঘাতে ২৮ থেকে ৩০ মণ পাওয়া যায়। বাজারে এই ধানের চালের বেশ চাহিদা থাকায় দামও অনেক।
+ There are no comments
Add yours