অনলাইন ডেস্ক॥
ইসরায়েলের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর তেল আবিব। এই শহরকে ধরা হয় ‘পাপের শহর’ হিসেবে। চলুন জেনে আসি পাপের শহরের নামকরণের পেছনের কারণ।
ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী অঞ্চলকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে ইসরায়েলের এই শহরটি। বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরগুলোর তালিকার মধ্যে তেল আবিবের নাম সবার আগে।
কী নেই এখানে? নাইটক্লাব, বার, ডিজে পার্টিসহ সব কিছুর ব্যবস্থাই আছে এখানে। সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বিরামহীন পার্টি চলতেই থাকে তেল আবিবের বার ও নাইটক্লাবগুলোতে। এ কারণে এই শহরকে অনেকেই বলে, ‘দ্য সিটি নেভার স্লিপস’ অর্থাৎ যে শহর কখনো ঘুমায় না- জেগে থাকে। রাতের এই উন্মত্ততার কারণে তেল আবিবকে ইসরায়েলের পাপের শহর বলা হয়।
আধুনিক রাস্তা, পার্ক, লেক, কৃত্রিম বনসহ নাগরিক জীবনের সকল সুযোগ সুবিধাই এখানে রয়েছে। আধুনিক পর্যটনব্যবস্থা ও যাবতীয় বিনোদনের সকল সুযোগ থাকায় পর্যটকদের কাছে তেল আবিব অন্য এক মাত্রা পেয়েছে। তাই বছরে সাগর তীরবর্তী এই শহরে ৩০ লক্ষের ও বেশি পর্যটক ভীড় করে। তাছাড়া এটি বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।
প্রযুক্তির বিবেচনায় আমেরিকার সিলিকন ভ্যালির পরই আসে তেল আবিবের নাম। প্রযুক্তিকেন্দ্রিক বহু স্থাপনা গড়ে উঠেছে এই শহরকে কেন্দ্র করে। প্রায় হাজারেরও বেশি প্রযুক্তিকেন্দ্রিক স্থাপনা রয়েছে এখানে।
তেল আবিব শহর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯০৯ সালে। পরবর্তীতে বাইবেল থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নাম দেয়া হয় তেল আবিব।
ইহুদি অধিবাসীরা আধুনিক আবাসন প্রকল্পের কথা চিন্তা করেই এর গোড়াপত্তন করেন।
বর্তমানে তেল আবিবের আয়তন ৫২ কিলোমিটার। ২০২১ সালের হিসাব অনুযায়ী প্রায় ৪ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষ তেল আবিবে বাস করে। ১৯৪৮ সালে এই শহর থেকেই ডেভিড বেন গুরিয়ন ইসরায়েলের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তারা তাদের পবিত্র শহর জেরুজালেমকে রাজধানী ঘোষণা করলেও, তৎকালীন সময় জেরুজালেম জর্ডানের অধীনস্থ ছিল। সেই কারণে ইহুদিরা তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতে তেল আবিব শহরকে বেছে নেয়।
২০২১ সালেই ১৭৩টি দেশের মধ্য থেকে তেল আবিব ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় শীর্ষে উঠে আসে। বিভিন্ন পণ্য, সেবার মূল্য বিবেচনায় এই তালিকা তৈরি করা হয়। ডলারের বিবেচনায়, ইসরায়েলি মুদ্রার মান কমে যাওয়ায় এখানকার জীবন যাপনের খরচ অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে পরিবহন খরচ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামে উর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে।
তেল আবিবকে বলা হয় মধ্যপ্রাচ্যের মিয়ামি। এখানকার সমুদ্র দেখলে বুঝা মুশকিল যে তেল আবিব, না মিয়ামি। বিশ্বের ‘পার্টি করা দেশ’গুলোর কাতারেও তেল আবিব থাকবে সবার আগে। শুরুতে ধর্মনির্ভর দেশ ও জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও পরবর্তীতে এখানকার মানুষের ধর্মচর্চা নিয়ে তেমন একটা আগ্রহ দেখা যায় না। বরং তাদের অধিকাংশই ধর্মনিরপেক্ষ।
এখানকার মানুষ আমোদ ফুর্তিতে এমনভাবে মেতে থাকে যেন তারা রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও অস্থিরতার কথা ভুলেই গেছে। এসব দিক বিবেচনায় অনেকের কাছেই ‘পাপের নগরী’ বলে বিবেচিত হয় তেল আবিব।
+ There are no comments
Add yours