উন্নত মানের দার্জিলিং কমলা চাষে সফলতার গল্প
অনলাইন ডেস্ক॥
উন্নত মানের দার্জিলিং কমলা চাষে সফল হয়েছেন একজন ফুলচাষি, তার নাম শাহাজান আলী। চলতি বছর তার ৬২ শতাংশ সমতল জমিতে দার্জিলিং জাতের কমলার ব্যাপক ফলন এসেছে। বাংলাদেশের বিরাজমান আবহাওয়ায় উন্নত জাতের এ কমলার আশাতীত ফলনে কৃষি অর্থনীতিতে বিপুল সম্ভাবনা দেখছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
এ বছর তার কমলা গাছে প্রচুর পরিমাণ কমলা ধরেছে। প্রতিটি গাছই কমলার কারণে মাটিতে নুয়ে পড়ছে। সমতল ভূমিতে উন্নত জাতের দার্জিলিং কমলা হবে এটা তিনি কখনও কল্পনাও করতে পারেননি। এ বছর শাহাজান আলীর কমলা বাগানের দাম চার লাখ টাকা উঠবে বলে তিনি আশা করছেন।
যশোরের ঝিকরগাছার গদখালীর পানিসারার মাঠে ফুলের শেটের পাশেই কৃষক শাহাজান আলীর এই চোখ জুড়ানো কমলা বাগান। জানা গিয়েছে প্রথমদিকে ইউটিউব দেখে চায়না কমলা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারেন ফুলচাষি শাহাজান। পরে তিনি পার্শ্ববর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গার একটি খামার পরিদর্শন করেন। প্রথমে তিনি তার ফুলের খামারে পাশে সীমিত পরিসরে চায়না লেবুর চাষ শুরু করেন। এরপর তিনি বাইরে থেকে দার্জিলিং জাতের কমলা গাছের চারা এনে সেখানে গড়ে তোলেন কমলা বাগান। বর্তমান তার বাগানে প্রতিটি গাছেই শত শত দার্জিলিং কমলা ধরেছে। এসব কমলা কেনার জন্য পাইকার ব্যবসায়ীরা প্রতিদিনই তার বাগানে ছুটে আসছেন।
শাহাজান আলী গণমাধ্যমকে বলেন, ফুলচাষের পাশাপাশি ২০১৯ সালে শখ করে তিনি সীমিত পরিসরে চায়না কমলা লেবুর গাছ লাগান। এরপর থেকে তিনি ইচ্ছা করেন তার বাগানে দার্জিলিং কমলা লেবুর গাছ লাগাবেন। পরে স্থানীয় কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় বাইরে থেকে চারা সংগ্রহ করে ৬২ শতাংশ জমিতে বাগান গড়ে তোলেন। প্রথম বছর ২০২২ সালেই তিনি গাছে ফলন পান এবং আড়াই লাখ টাকার বিক্রি করেন।
জানা যায়, দার্জিলিং কমলা চাষে অন্যান্য ফসলের চেয়ে খরচ কম। গাছ লাগানোর পর সামান্য জৈব সার আর নিয়মিত সেচ দিলেই চলে। এতে কোনো ধরনের কীটনাশক প্রয়োগ করা লাগে না বলে তিনি দাবি করেন।
শাহাজান আলীর এ কমলা বাগান দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষি উদ্যোক্তারা ছুটে আসছেন তার বাগানে।
এ বিষয়ে ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, করোনা পরিস্থিতির পর থেকে বাংলাদেশে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। এসব চাহিদা পূরণে প্রতি বছরই বিপুল পরিমাণ কমলা, মাল্টা জাতীয় ফল বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এসব আমদানিনির্ভরতা কমাতে সরকার ‘নিরাপদ উদ্যানতাত্ত্বিক ফসল উৎপাদন ও সংগ্রহোত্তর প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশে ফল চাষের সম্প্রসারণ করছে। এরই আলোকে কৃষক শাহাজান আলীকে ২০১৯ সালে দার্জিলিং কমলার চারা সরবরাহ করা হয় কৃষি বিভাগ থেকে।
+ There are no comments
Add yours