অনলাইন ডেস্ক॥
সবুজ রঙের ছোট এলাচ একটি মশলা জাতীয় কৃষি। এই এলাচ চাষে ১ বিঘা জমি থেকে এক সিজনে ১০ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। যা এখন পর্যন্ত এমন কোন ফল বা ফসল বাংলাদেশে নাই যাতে প্রতি বিঘা প্রতি এতো আয় হবে।
এলাচ একটি মসলা জাতীয় উদ্ভিদ। এ গাছের ফল মসলা হিসেবে খাওয়া হয়। এলাচ খাবার এবং পানীয় উভয় প্রকারে স্বাদ এবং রান্না মশলা হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
উর্বর মাটি এবং হালকা রোদ-ছায়া যুক্ত জায়গায় এলাচ গাছ ভালো জন্মায়। ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় ছায়ার মধ্যে এলাচ গাছের ফলন ভালো হয়। এলাচ চাষের ক্ষেত্রে আলাদা কোনো জমির প্রয়োজন হয় না। অন্য গাছের ছায়ার নিচে বা বাগানের ভিতর গাছের ছায়াযুক্ত স্থানে অথবা বাড়ির আঙ্গিনা অথবা ফলদ বৃক্ষের বাগানে এলাচ চাষ করলে এলাচের ভালো ফলন হয়। ফসলের মাঠে এলাচ চাষ করলে ফলন ভালো পাওয়া যায় না।
শতক প্রতি ১৪ টি এলাচের চারা লাগে যা প্রতি ৩৩ শতকে ৪৬০ টি চারা রোপণ করা যায়।
সবকিছু ঠিকঠাক পরিমাণ মতো থাকলে এলাচ উৎপাদনে তেমন কোন খরচ হয় না। শুধু মাত্র প্রথম বছরে চারা কেনার খরচ হয়, তবে পরের বছরগুলোতে আর চারার টাকা লাগে না। যদি এটেল মাটি হয় এবং জমিতে বালির পরিমাণ কম থাকে তাহলে অতিরিক্ত বালি মেশাতে হবে। কিন্তু দোআঁশ মাটিতে কোন কিছু করতে হবে না। মাটিতে জৈব উপদানের পরিমাণ কম থাকলে পচা গোবর বা কেঁচো কম্পষ্ট সার অতিরিক্ত প্রয়োগ করতে হবে।
চারা রোপণের ৩ বছর পর এবং শীতকালে এলাচ সংগ্রহের পর পুরাতন গাছ ছাটাই করতে হবে। অবাঞ্চিত মরা গাছ,পাতা ছাটাই না করলে ভালো ফলন হয় না। শীতকালে এলাচ গাছে ফুল ও ফল হয় না। তাই শীতকালে মরা গাছ ও দূর্বল গাছ ছাটাই করাই উত্তম।
বর্তমানে বাংলাদেশে এলাচের যে জাতগুলো আছে সেগুলোর সবগুলোই গাছের গোড়ায় মাটি সংলগ্ন হয়ে গুচ্ছাকারে ফুল গজায়। পরে সেই ফুল গুলো থেকে গুচ্ছ আকারে ফল হয়ে থাকে। পুর্বে বাংলাদেশে অনেক এলাচের গাছ দেখা যেত সেগুলোতে সেগুলোতে ২-৩ বছরের মাথায় ফুল আসত।
বাংলায় আষাঢ় মাসে এলাচের এই জাতগুলোর ফুল আসে এবং ভাদ্র ও আশ্বিন মাসের শেষের দিকে এলাচ পরিপক্ক হয়। তখন বাগান থেকে কাঁচা এলাচ সংগ্রহ করে রোদে শুকাতে হয় অথবা বেশি পরিমাণে উৎপাদন করলে ড্রায়ার মেশিনের সাহায্যে শুকাতে হয়। বর্ষাকালে হয়ে থাকে বলে এলাচ না শুকিয়ে ঘরে রাখলে পচন ধরার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এলাচ ফল পরিপক্ক হলে ফলগুলো দেখতে কিছুটা সবুজের উপর লালচে হবে।
এলাচের চারা রোপণের ২য় বছরে কিছু গাছে এলাচ ধরা শুরু করলেও রোপণের ৩য় বছর থেকে এলাচের গাছে ফলন দেওয়া শুরু হয়। প্রায় প্রতি ঝোপ থেকে প্রায় ১ কেজির উপরে ফলন পাওয়া যায়। ৩ বৎসর পরে ১ বিঘা বা ৩৩ শতক জমি থেকে ৯০০ থেকে ১০০০ কেজি বা ১ টন ফলন পাওয়া যাবে। সেই হিসাবে ১ বিঘা জমি থেকে বছরে ১০ লক্ষ টাকার এলাচ উৎপাদন করা সম্ভব।
+ There are no comments
Add yours