কক্সবাজারে গায়েবী মসজিদ, জিনেরা নামাজ পড়েন এখানে

Estimated read time 1 min read
Spread the love

অনলাইন ডেস্ক॥
কক্সবাজারে রয়েছে এক গায়েবী মসজিদ। এই মসজিদে আসেন, হিন্দু, বৌদ্ধসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন। মসজিদটি কে, কখন, কীভাবে নির্মাণ করেছেন এ সংক্রান্ত কোন তথ্য কারোর কাছেই জানা নেই। প্রতিদিন এ মসজিদে আসেন অসংখ্য পর্যটক। কেউ কেউ আসেন মনের আশা পূর্ণ করতে। তারা মানত করেন এই গায়েবি মসজিদে।

মসজিদটি আয়তনে খুব ছোট। এর উত্তর পাশে রয়েছে একটি বিশাল দিঘি। মসজিদটির ভেতরে উত্তর-দক্ষিণ লম্বা ২৩ ফুট, পূর্ব-পশ্চিমে লম্বা ১৪ ফুট। মসজিদের বাইরে উত্তর-দক্ষিণে লম্বা ৩৪ ফুট আর পূর্ব-পশ্চিমে ২৬ফুট। মসজিদের সামনে তথা পূর্ব দিকে পাঁচ ফুট বা ছয় ফুটের একটি বারান্দা ছিল। তার সামনে ছিল খোলা উঠান।

মসজিদের মূল পিলার বা স্তম্ভ চারটি। মসজিদের একটি মাত্র দরজা। দরজার উচ্চতা পাঁচ ফুট। জানালা রয়েছে দুটি। জানালার উচ্চতা সাড়ে চার ফুট, প্রস্থ তিন ফুটের মতো। বর্তমানে মসজিদের ফ্লোরটি পাঁচ থেকে ছয় ফুট ভরাট হয়ে গেছে। মসজিদের ছাদের উপর রয়েছে পাশাপাশি তিনটি গম্বুজ। মসজিদের দেয়াল প্রায় প্রায় পাঁচ ফুট চওড়া। কোথায়ও লোহার ব্যবহার হয়নি। চুন- সুরকি দিয়ে তৈরি মসজিদের দেয়াল ও গম্বুজ। ১৫ টি গম্বুজ দিয়ে তৈরি হয় এ মসজিদটি।

কক্সবাজার শহরের বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন সড়কের পূর্ব পার্শে এর অবস্থান। কক্সবাজার বাস টার্মিনালের উত্তরে পৌরসভার বিজিবি ক্যাম্প এলাকায় ধান ক্ষেতের মাঝখানে গম্বুজ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মসজিদটি। তবে মসজিদটি অনেকের কাছে বিভিন্ন নামে পরিচিত। অনেকেই বলে সাচী মসজিদ। আবার অনেকেই মোঘল আমলের মসজিদ, গায়েবী মসজিদ ও পোটকা মসজিদ নামেও পরিচিত। কিন্তু মসজিদ আসলেই কোন আমলে বা কে তৈরি করেছিল তার সঠিক তথ্য কেউ জানে না। এমনকি কত বছর আগের মসজিদ তাও সঠিক তথ্য নেই। বর্তমানে এটি সাচী চৌধুরী মসজিদ হিসেবে নাম রয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগের তথ্য সেবায় বলা হচ্ছে, এই মসজিদের বয়স সর্বনিম্ন ৪০০ বছর অথবা সর্বোচ্চ ৬০০ বছর। জনশ্রুতি রয়েছে বহুকাল আগে জীনেরা এ মসজিদ তৈরি করেছিল। এখন রাতের বেলায় মসজিদে জীনেরা নামাজ আদায় করেন নিয়মিত। প্রায় ১০০ জন মতো নামাজ আদায় করতে পারে এই মসজিদে।’

এছাড়া মসজিদটি ঘিরে রয়েছে নানান জনশ্রুতি। স্থানীয় এক মুসল্লি বলেন, মৌলানা আবুল হোছাইন নামে এক ইমাম ছিলেন। তার মতে, জ্বীনেরা এ মসজিদে বেশি সময় ধরে এবাদত বন্দেগি করতেন। তাই মুসল্লীরা গভীর রাত পর্যন্ত অবস্থান করতেন না। অনেক সময় মাগরিব ও ইশা নামাজ একসঙ্গে পড়তে হতো।’ অনেক সময় ‘ফজরের আজান দেয়ার জন্য ওই ইমাম মসজিদের আশেপাশে অবস্থান করতেন কখন সুবেহ ছাদেক হবে। জীনেরা চলে গেলে তারপর আজান দিতেন। এমনকি সারারাত সেখানে জ্বীনেরা সমস্বরে কোরাআন তেলোওয়াত করতেন। শব্দ শোনা যেত বাহির থেকে। অনেক অলৌকিক ঘটনা রয়েছে মসজিদটিতে। কিছুদিন আগে বিজিবির এক সদস্য আলো জ্বালিয়ে এশার নামাজ আদায় করেছেন এমন সময় অলৌকিক ভাবে আলো নিভে গেলে আবার আলো জ্বালানোর চেষ্টা করলে অচেতন হয়ে পড়ে যায়। পরের দিন সকালে মুসল্লিরা তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে।

বর্তমান এ মসজিদের খতিব আমান উল্লাহ বলেন, ‘এক সময় দিনের বেলাতে ভয় পেত মুসল্লীরা। অন্য ধর্মের লোকজন ও প্রতিদিন মানত দিতে এই অলৌকিকে মসজিদে আসেন।আসেন অসংখ্য পর্যটক ও। ১৯৬০ সালে ও ১৯৯১ সালের প্রলংকরী ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসে ও মসজিদ টি অক্ষত। অথচ আশেপাশের অনেক মজবুত স্থাপনা ও নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এ মসজিদের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি প্রাকৃতিক ভাবে শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত। গরমের সময় ঠান্ডা আর শীতকালে গরম অনুভূত হয়।’

 

 

About The Author


Spread the love

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours