মোহাম্মদ ইদ্রিস মিয়া ॥
মোঃ আঃ কুদদূস। বিশিষ্ট কবি ও গীতিকার-সত্যিকারের একজন সাদা মনের মানুষ। যাকে আমি হোলম্যান হিসেবে সম্বোধন করি। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তাঁর কর্ম দিয়ে ন্যায়নিষ্ঠাবান মানুষ হিসেবে ইতোমধ্যেই নিজেকে একজন সত্যিকারের কর্মবীর বলতে তাঁর যোগ্যতা তিনি প্রমান করেছেন। আজকের এই লেখার তথ্য আমার ব্যক্তিগত। কারণ তাঁকে খুব কাছে থেকে দীর্ঘসময় দেখার এবং বোঝার মতো সময় এবং সুযোগ হয়েছিলো. এজন্য আমি নিজেকে ধন্য মনে করি।
কথায় আছে গুণীর কদর না করলে গুণীর জন্ম হয়না- তিনি একজন সত্যিকারের গুণী, আর তাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব গ্রহন করার পরই তিনি এই জেলার গুণীদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হোন।
তিনি প্রমান করেছেন ফুল যেখানেই যায়- তার সাথে সুরভিটুকু সাথে করে নিয়েই যায়। সাতটি জনপ্রিয় কাব্যগ্রন্থ লিখেছেন তিনি। আরও কিছু বই প্রকাশের পথে। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের বইমেলায় কমপক্ষে দুটি বই প্রকাশিত হবে বলে জানা গেছে।
প্রকাশিত এইসব বই কোনো সাধারণ কাঁচা হাতের নয়। কবিতার আইন মেনে, ব্যাকরণ জেনে তবেই রচনা করেছেন এইসব, এই কবি। তিনি বিটিভির একজন তালিকাভুক্ত গীতিকার। ইতোমধ্যেই তাঁর গান দেশে বিদেশে সমাদৃত হয়েছে।
বিভিন্ন সময় তাঁর সাথে কবিতা বিষয়ে কথা বলার মতো সুযোগ হয়েছে আমার।
তার মতে, কবিরা একটা পুরো জাতির তিন ভাগের এক অংশ। সুতরাং এখানে আমাদের অর্জন নিতান্তই কম নয়।
কবি-সাহিত্যিকরা সংখ্যায় কম হলেও তারা হলেন যেকোনো দেশের ওই জাতির প্রাণশক্তি। পথপ্রদর্শক-সময়ের সেরা টর্চলাইট। আমাদের দেশের কথা ধরলে বলা যেতে পারে এই কবি সাহিত্যিকদের মাধ্যমেই বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্য, কৃষ্টি, সাহিত্য ও সংস্কৃতি ধারণ ও বিকাশ লাভ করেছে। এমনকি এর ব্যাপক প্রভাব ছিলো আমাদের ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে।
তাঁর মতে, হঠাৎ করে কেউ কবি বা সাহিত্যিক হতে পারে না।
এজন্য দীর্ঘদিনের চেষ্টা থাকতে অব্যাহত থাকতে হয়, সাধনা থাকতে হয়-অদম্য। এবং টিম ওয়ার্ক করতে হয়। প্রচুর পড়াশোনা করতে হয়। জানতে হয়।
তাঁর মতে, একজন ভালো কবি বা লেখক হতে হলে সাহিত্য আড্ডার কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশের অনেক পথিতযশা কবি-সাহিত্যিক এই সাহিত্য আড্ডার মাধ্যমেই তৈরি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পারিপার্শিক অবস্থা ও ব্যক্তিবর্গ তাদের সহযোগিতা করেন।
তারই ফলশ্রুতিতে তিনি এই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গড়ে তুলেছেন, অদ্বৈত মল্লবর্মণ স্মৃতি পাঠাগার ও গবেষণা কেন্দ্র। আর এই প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোগে হয়ে থাকে মঙ্গল সাহিত্য আড্ডা। এই আড্ডাটি সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবারে অনুষ্ঠিত হয়। আড্ডায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সকলশ্রেণির কবি সাহিত্যিকগণ অংশ নেন।
এখানে একটি কথা বলে রাখা আবশ্যক মনে করি যে, আমাদের মতো কবি-লেখকদেরকে একটা দীর্ঘসময় পর হলেও তিনিই একটি মাত্র প্লাটফর্মে এনে দাঁড় করাতে পেরেছেন- এটাই তাঁর সবচেয়ে বড় অর্জন-এটাই আমার কাছে মনে হয়েছে।
একজন কর্মবীর কবি ও গীতিকার মোঃ আঃ কুদদূস কাজ করেন নিরলস। সরকারি ছুরি দিনও তিনি বিভিন্ন উন্নয়নমুলক, জনকল্যাণ সম্পর্কিত কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। তাঁর আগ্রহে ও পৃষ্ঠপোষকতায় এখানে নিয়মিত বের হচ্ছে লিটল ম্যাগাজিন।
শুধু তাই নয়-এখানকার কয়েকজন নবীন-প্রবীন লেখকদের অনুরোধে তিনি প্রতিমাসে অন্তত একটি করে কবিতার ব্যাকরণগত ক্লাসের মাধ্যমে আমাদেরকে কবিতা-ছড়া লিখতে হাতে-কলমে শিক্ষা দিচ্ছেন। মানুষ এই পৃথিবীর অতি ক্ষণস্থায়ী। এই কথাটি মাথায় রেখেই অমরত্মের সাধ নিতে তার এই নিরন্তর প্রচেষ্টা।
মঙ্গল সাহিত্য আড্ডার শুরুর দিকে, আমি ব্যক্তিগতভাবে অনুধাবন করতে পারলাম যে, যা লিখেছি তা কবিতা নয়- কবিতা জাতীয় কিছু। আর এজন্যই একদিন স্যারকে বললাম আমরা কবিতার ব্যকরণগত দিক এবং এর ইতিহাস জেনে নিয়ম মেনে কবিতা লেখা শিখতে চাই। আমাদের স্যার সানন্দে রাজি হলেন।
এরপর থেকেই আমরা নিয়মিত স্যারের কবিতার ক্লাসে যেতে থাকি। যতই ক্লাস করি ততই নিজের অজ্ঞতার গুহায় নিজেকে বন্ধী অবস্থায় আবিষ্কার করি।
ইতোমধ্যেই তিনি আমাদেরকে হাতে কলমে ছড়া, কবিতা ও ছন্দের নানান দিক শিখিয়েছেন। যা আমাদের ইতিপূর্বে জানা ছিল না এবং জানার কোনো সুযোগও ছিল না।
আমাদের কবিতার ক্লাসে যাঁদেরকে নিয়মিত সারথি হিসেবে পেয়েছি তারা হলেন-
অ্যাডভোকেট মো. হুমায়ুন কবীর, প্রভাষক রাবেয়া জাহান তিন্নি, রোকেয়া রহমান কেয়া, খালেদা মুন্নী, মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ, জুয়েনা বিনোদিনী, ঝর্ণা আক্তার, মাশরেকী শিপার, তিতাস হুমায়ুন, মাজহারুল ইসলাম এবং আমি নিজে।
এছাড়াও অনেকের নাম এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না। এজন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।
+ There are no comments
Add yours