কোটি টাকার খেজুরের গুড় উৎপাদনের টার্গেট

Estimated read time 1 min read

অনলাইন ডেস্ক

নাটোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয়েছে শীতের আমেজ। রাতে ঠান্ডা-হিমেল বায়ু আর সকালের শিশির ভেজা ঘাস-পাতাই জানান দিচ্ছে শীতের আগমনি বার্তা। পাশাপাশি শুরু হয়েছে গাছিদের খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্ততি। চলছে খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরিকারী গাছীদের নিয়ে কর্মশালা।

আর মাত্র কয়েকদিন পরেই পাওয়া যাবে মিষ্টি মধু সেই কাংখিত খেজুরের রস। গ্রামীণ জীবনের প্রাত্যহিক উৎসব শুরু হবে খেজুরের মিষ্টি রসকে ঘিরে। পুরো শীত মৌসুম জুড়ে চলবে সু-স্বাদে ভরা বিভিন্ন ধরনের পিঠা উৎসব।
এছাড়া পায়েস-পুলিসহ নানা রকম খাওয়ার আয়োজনতো রয়েছেই। শীতের মৌসুমে খেজুরের রস ও গুড়সহ পিঠা খেতে শহর থেকে গ্রামের বাড়ি বেড়াতে আসেন অনেকেই। শীতের সকালের রৌদ্রে খেজুরের রস ও মুড়ি খাওয়ার আসর বসে বাড়ির আঙ্গিনায়। শীত মৌসুমে গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে উৎসবমুখর পরিবেশে খেজুরের গুড় দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরির আয়োজন করা হয়। সেই প্রতিক্ষায় আছেন গ্রামের মানুষ।
প্রতিদিন একজন গাছি প্রায় ৫০ থেকে ৫৫টি খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করে থাকেন। একজন গাছি শীত মৌসুমে ৭০ থেকে ৭৫ দিনে একটি খেজুর গাছ থেকে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ কেজি গুড় পেয়ে থাকেন। এছাড়া খেজুরের পাতা দিয়ে মাদুর তৈরিসহ খেজুরের গাছ কেটে ঘর তীর তৈরি করা হয়।

নাটোর জেলার সব উপজেলাতেই খেজুর গাছ থাকলেও লালপুর উপজেলায় তুলনামুলক খেজুরের গাছের সংখ্যা ও গুড় উৎপাদন হয় সবচেয়ে বেশি। এরপরেই রয়েছে বড়াইগ্রাম উপজেলা।
এরপরও বড়াইগ্রামে খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরিকারী অর্ধশতাধিক গাছীদের নিয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

লালপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, দশটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা অঞ্চলে সড়ক ও রেললাইনের দুই পাশে, জমির আইল, বাড়ির আঙ্গিনায় ছড়িয়ে আছে প্রায় ৩ লাখ ১৪ হাজার ৫০০ খেজুরের গাছ। এসব গাছ থেকে গুড় সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৭৯ মেট্রিক টন। খেজুর গাছের রস সংগ্রহর উপর প্রায় ৩ হাজার পরিবার নির্ভরশীল।

নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলায় মোট খেজুর গাছ রয়েছে ৬ লাখ ২৭ হাজার ৭৯০টি। জেলায় প্রতি মৌসুমে গড়ে প্রায় ৯ হাজার ৬২৩ মেট্রিক টন খেজুর গুড় উৎপাদন হয়। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ১০৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রতি বছর নাটোর জেলায় ১০৫ কোটি টাকার খেজুর গুড় উৎপাদন ও বাজারজাত হয়। গত মৌসুমে প্রায় শত কোটি টাকার খেজুর গুড় উৎপাদন হয়েছে। জেলায় অন্তত ১০ হাজার মানুষ খেজুরের রস ও গুড় উৎপাদনের উপর নির্ভরশীল।

খেজুরের রস ও গুড় দু’টোই মানুষের কাছে খুব প্রিয় জিনিস। খেজুরের রস ও গুড়কে ঘিরে কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার মানুষ খেজুরের রস দিয়ে গুড় উৎপাদন করে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন। তবে নিরাপদ গুড় উৎপাদন, সঠিক ভাবে বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলে এ খাত লাভজনক পর্যায়ে পৌছে যাবে। এজন্য ভোক্তাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে, খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় উৎপাদনে গাছিদের সঠিক ধারণা দিতে হবে।

 

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours