ডেস্ক নিউজ ॥
তিস্তার ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে গতকাল শুক্রবার দুপুর থেকে পানি আরো বাড়তে শুরু করেছে। এতে নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম হয়ে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের হরিপুর পর্যন্ত নদীতীরবর্তী এলাকার চর ও নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গতকাল রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার শংকরদহ ইউনিয়নের গঙ্গাচড়া গ্রামে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদদৌলা বলেন, গতকাল সকাল ৬টায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার এবং সকাল ৯টায় ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বিকাল ৩টায় ২৫ সেন্টিমিটার নিচে নামে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী জানান, এলাকার বসতঘর-রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। হাঁটু ও কোমর সমান পানিতে জনজীবন বিপর্যস্ত। অনেকেই আশ্রয় নিয়েছে উঁচু স্থানে। রাস্তাঘাটের পাশাপাশি তলিয়ে যায় আমনের ক্ষেত। পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। গবাদি পশু নিয়ে মানুষ বিপাকে পড়েছে।
রংপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, উজানে পানি বাড়লে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতির আশঙ্কা আছে। বাড়তে পারে নদীভাঙনের তীব্রতাও।
কুড়িগ্রামে উলিপুরের বজরা ইউনিয়নে পশ্চিম বজরা গ্রামে তিস্তার ভাঙন অব্যাহত আছে। তবে নতুন করে কোনো স্থাপনা না ভাঙলেও মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। জানা যায়, ভাঙনের আশঙ্কায় লোকজন ঘরবাড়ির মালপত্র সরিয়ে নিচ্ছে। পশ্চিম বজরার পূর্বপাড়া দাখিল মাদরাসার সুপার ও বজরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি রাফাকাত হোসেন জানান, ভাঙনের কবল থেকে বাঁচতে মাদরাসাটির অবকাঠামো সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্ণা, পাটিকাপাড়া, সানিয়াজান ও ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জের কাকিনা এবং আদিতমারীর মহিষখোচা ইউনিয়নের নিচু এলাকার কিছু বসতবাড়িতে বৃহস্পতিবার থেকেই পানি উঠতে থাকে। মহিষখোচার কয়েকটি রাস্তায় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠে যায়।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ী, খগাখড়িবাড়ী, খালিশাচাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী ও গয়াবাড়ী ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পাঁচ সহস্রাধিক পরিবার বন্যাকবলিত হয়। গতকাল বেশির ভাগ এলাকা থেকে পানি নেমে যায়।
+ There are no comments
Add yours