অনলাইন ডেস্ক॥
বাংলার প্রকৃতিতে শীত আসতে শুরু করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় পদ্মা নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে ঝাঁক বেঁধে আকাশে ডানা মেলছে অতিথি পাখির দল।
নদীর দামুস থেকে দামুসে উড়ে চলা পাখির কিচির-মিচিরে মুখরিত পদ্মাচর। পানি নিয়ে খেলা, খাবারের সন্ধান, খুনসুটি আর বিশ্রাম শেষে হঠাৎ করেই উড়ে চলার দৃশ্য যেন জলরঙে আঁকা ছবি।
ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজবাড়ীর বুক চিড়ে বয়ে যাওয়া নদীসহ নদীর পাড়ের গ্রাম ও জলাশয়ে মুগ্ধতার আবেশ ছড়াচ্ছে এ দৃশ্য।
পদ্মাপাড়ে বেড়াতে আসা এক জানান, ‘শীতের শুরুতেই আমাদের এই পদ্মার চরে অতিথি পাখিগুলো আসে। এগুলো দেখতে খুবই ভালো লাগে। নদীর পাড়ে বেড়াতে এসে পাখিগুলো দেখে নৌকায় চড়ে পদ্মার চরে গিয়েছিলাম তাঁদের সঙ্গে মিশে যেতে।’
আরেক দর্শনার্থী বলেন, ‘পদ্মার চরে আসা অতিথি পাখিগুলো দেখে বেশ ভালো লাগছে। এ এক অন্য রকম দৃশ্য।’
ঘুরতে আশা দর্শনার্থীদের বাড়তি বিনোদন দিতে নদী পারাপারে বেড়েছে মাঝিদের ব্যস্ততা। মাঝি ও নৌকা মালিকেরা বলেছেন, নদীপাড়ের সৌন্দর্যবর্ধন করা হলে আরো বেশি দর্শনার্থী আসত।
এক নৌকার মাঝি জানান, প্রতিদিন বিকেল হলেই নদীর পাড়ে বেড়াতে আসেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ। তাঁরা নৌকায় চড়ে পদ্মার চর সহ নদীতে ঘুরে বেড়ান। ফলে মাঝিদের রোজগার ভালো হচ্ছে।
তবে, অভিযোগ আছে চরে পাখিদের আগমনের সঙ্গে বাড়ে পাখি শিকারীদের আনাগোনা। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া বার্ড ক্লাবের সভাপতি ও পাখি গবেষক এস আই সোহেল জানান, অতিথি পাখি শিকার বন্ধ না হলে জীববৈচিত্রের মান নষ্টের পাশাপাশি কমে আসবে অতিথি পাখির সংখ্যা। এসব পাখি আমাদের সম্পদ। এগুলো রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। যা আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ভূমিকা রাখে। স্থানীয়দের সচেতনতার পাশাপাশি দরকার প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা।’
এদিকে বন কর্মকর্তারা বলছেন, প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে পরিবেশগত উন্নতি ও খাবার নিশ্চিত হওয়ায় এ সময়ে পদ্মার চরে অতিথি পাখিদের বিচরণ বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে এসব পাখিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, উপজেলা বন বিভাগসহ স্থানীয় প্রশাসন।
উপজেলা বন কর্মকর্তা আবু বকর জানিয়েছেন, বিভিন্ন ধরণের গাছপালা বাড়ায় পাখির খাবার এবং বসবাসের জায়গা বেড়েছে যা পাখিদের বাস যোগ্য হওয়ায় তারা পদ্মার চরে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে।
এ ছাড়া, বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য তৈরির জন্য ফিলিপনগর ইউনিয়নের বাহিরমাদি মৌজা এলাকায় জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব দেওয়া আছে অনুমতি পেলে আমরা নতুন করে কার্যক্রম শুরু করব।
বন বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, এ বছর উপজেলার পদ্মার চরে মদনটাক, বালিহাসসহ হিমালয়ের শকুনের দেখা মিলেছে। এ ছাড়া চরের বিভিন্ন স্থানে স্থায়ী বাসা বেঁধেছে শত শত পরিযায়ী পাখি।
+ There are no comments
Add yours