পাহাড়ে চলছে কঠিন চীবর দান উৎসব

Estimated read time 1 min read
Spread the love

অনলাইন ডেস্ক॥

পাহাড়ে চলছে মাস ব্যাপী কঠিন চীবর দানোৎসব। লাখো পূণ্যার্থীর শ্রদ্ধায় সিক্ত পার্বত্যাঞ্চলের বিভিন্ন বিহারের ভিক্ষু সংঘ। আর রঙামাটি রাজবনবিহারে মহাদানযজ্ঞ দানের মধ্যদিয়ে শেষ হবে মাস ব্যাপী চলা পার্বত্যাঞ্চলের এ কঠিন চীবর দানোৎসব। অন্যদিকে চীবর দানের উৎসবের আমেজ ছড়িয়েছে গোটা পার্বত্যাঞ্চলে। দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে ভক্ত, অনুরাগী আর পূণ্যার্থীরা। ভিক্ষু সংঘের সাধু সাধু সাধু ধ্বনিতে শান্তির বার্তা দিয়ে যাচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরুরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে , সম্প্রতি প্রবারণা পূর্ণিমার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে কঠিন চীবর দানোৎসব। উৎসব ঘিরে রাঙামাটিতে বইয়ছে আনন্দ উল্লাস। রাঙামাটির প্রতিটি জেলা উপজেলার বৌদ্ধ বিহারগুলোতে পালন করা হচ্ছে এ কঠিন উৎসব। প্রতিদিন থাকছে চীবর দানের আয়োজন। মাসব্যাপী বিহারে বিহারে ঘুরে বৌদ্ধ পূণ্যার্থীরা ভান্তেদের চীবন দান করবেন।

বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের মতে, বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তিন মাস বর্ষাবাস শেষে প্রবারণা পূর্ণিমার দিন বিহারে ফিরে আসে। প্রবারণা পূর্ণিমা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তর ধর্মীয় উৎসব। এ প্রকারণার মধ্যেদিয়ে ভিক্ষুদের বিহারে আমন্ত্রণ জানায় পূণ্যার্থীরা। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা ফিরে আসার আনন্দে বস্ত্রদান অর্থাৎ কঠিন চীবর দানোৎসবের আয়োজন করা হয়। সারা বছরের জন্য ভিক্ষুদের পরিদানের বস্ত্র দান করা হয় চীবন দান উৎসবের মধ্য দিয়ে।
এরই মধ্যে ধনপাতা বৌদ্ধ বিহার, বদ্ধু আংকার বৌদ্ধ বিহার ও সুবলং বৌদ্ধ বিহারে শেষ হয়েছে চীবর দানোৎসব।

স্থানীয় সেবিকা চাকমা বলেন, এ চীবর দানকে কঠিন চীবর দান বলার একটি কারণ আছে। কারণ, ভিক্ষুদের পরিদানে বস্ত্র বিশেষভাবে তৈরি করা হয়। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারীরা মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা তৈরি করে। তার আবার রঙ করে শুকিয়ে প্রস্তুত করা হয় কাপড় বুনন করার জন্য। রঙটাও গাছের শিকড় আর বাকল দিয়ে তৈরি করা হয়। পুরোপুরি প্রকৃতগতভাবে। চরকায় সুতা কাটার পর কোমর তাঁতে তৈরি করা হয় এ চীবর। যা আসলে অনেক কষ্ট সাধ্য। তাই এটাকে কঠিন চীবর বলা হয়। তারপর ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এটি বৌদ্ধ ভান্তেদের উদ্দেশ্যে উৎর্সগ করা হয়।
রাঙামাটি রাজবন বিহার উপাসক-উপাসিকা পরিষদের সভাপতি গৌতম দেওয়ান বলেন, বছরের এ একটা সময় দূর দূরান্ত থেকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা সমবেত হয় বিহারে। তখন সবার একটা উদ্দেশ্য থাকে তা হচ্ছে চীবর উৎসর্গ করা। তখন থাকে না কোন হিংসা-বিদ্বেষ, স্বার্থপরতা, লোভ-লালসা, ক্ষমতার গর্ব, বর্বরতা ও পাশবিকতার। তাকে বুদ্ধের প্রেম, সাম্য, মৈত্রী, ক্ষমা, ত্যাগ, অহিংসা, আত্মসংযম ও করুণার বশবর্তী হয়ে বিশ্বমানবের সুখ-শান্তি ও কল্যাণে ব্রত থাকে সবাই।

রাঙামাটি রাজ বনবিহার সূত্রে জানা যায়, আগামী ২৩ ও ২৪ নভেম্বর রাঙামাটিতে শুরু হচ্ছে ৪৮তম কঠিন চীবর দান উৎসব। তার জন্য এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে বিহার কর্তৃপক্ষ।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন

About The Author


Spread the love

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours