অনলাইন ডেস্ক ॥
ফেরেশতারা আল্লাহর বিস্ময়কর সৃষ্টি। আল্লাহ তাঁদের বিশেষ ক্ষমতা ও দায়িত্ব দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। তাঁরা সবাই আল্লাহর অনুগত। তবে ফেরেশতাদের মধ্যে কতিপয় ফেরেশতাকে আল্লাহ বিশেষ মর্যাদা দান করেছেন।
আল্লাহর সব ফেরেশতা সম্মানিত। কেননা তাঁরা সবাই আল্লাহ আনুগত্য ও ইবাদতে মগ্ন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আকাশমণ্ডলী ঊর্ধ্বদেশ থেকে ভেঙে পড়ার উপক্রম হয় এবং ফেরেশতারা তাদের প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। আর জগদ্বাসীর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। জেনে রাখো, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ’ (সুরা আশ-শুরা, আয়াত : ৫)
কিছু ফেরেশতা অধিক নিকটবর্তী : আল্লাহর সব ফেরেশতা আল্লাহর অবাধ্যতা ও দোষ-ত্রুটি থেকে মুক্ত। সুতরাং তাঁদের সবাই আল্লাহর নিকটবর্তী বান্দা। তবে তাঁদের মধ্যে কতিপয় ফেরেশতা বিশেষ মর্যাদার অধিকারী। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মাসিহ আল্লাহর বান্দা হওয়াকে কখনো হেয় জ্ঞান করে না এবং ঘনিষ্ঠ ফেরেশতারাও করে না। আর কেউ তাঁর ইবাদতকে হেয় জ্ঞান করলে এবং অহংকার করলে তিনি অবশ্যই তাদের সবাইকে তার কাছে একত্র করবেন। ’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১৭২)
উল্লিখিত আয়াতে ব্যবহৃত ‘মালাইকাতুল মুকাররাবুন’ বা ঘনিষ্ঠ ফেরেশতারা শব্দযুগলের ব্যাখ্যায় প্রখ্যাত মুফাসসিরগণ বলেন, ‘এর দ্বারা বোঝা যায় স্তর ও মর্যাদার বিচারে ফেরেশতাদের মধ্যে তারতম্য আছে। ফেরেশতাদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় হলেন জিবরাইল, মিকাইল, ইসরাফিল, আজরাইল ও আরশ বহনকারী ফেরেশতাগণ। ’ (তাফসিরে রাজি : ১১/১১৯)
আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, “ফেরেশতাদের মধ্যে আরশ বহনকারী ‘কারাবিয়ুনরা’ রয়েছেন। আরশ বহন করার কারণেই তারা সবচেয়ে সম্মানিত ফেরেশতা। কোরআনে বর্ণিত নিকটবর্তী ফেরেশতাগণ দ্বারা তারাই উদ্দেশ্য। ” (আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া : ১/৪৯)
আয়েশা (রা.)-এর বর্ণনা থেকে তিনজন ফেরেশতার বিশেষ মর্যাদা বোঝা যায়। তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন তাহাজ্জুদের জন্য দাঁড়াতেন, তখন তিনি নামাজের শুরুতে বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি জিবরাইল, মিকাইল ও ইসরাফিলের প্রতিপালক, আসমান ও জমিনের স্রষ্টা এবং প্রকাশ্য ও অপ্রাকাশ্য বিষয় সম্পর্কে সম্যক অবগত। ’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৪২০)
যাঁরা ফেরেশতাদের নেতা : বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতাদের মধ্যে নেতৃত্ব দানকারী কিছু ফেরেশতা আছেন। যেমন জাহান্নাম সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, ‘অবিশ্বাসীদের জাহান্নামের দিকে দলে দলে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। যখন তারা জাহান্নামের কাছে উপস্থিত হবে, তখন এর প্রবেশদ্বারগুলো খুলে দেওয়া হবে এবং জাহান্নামের রক্ষীরা তাদের বলবে, তোমাদের কাছে কি তোমাদের মধ্য থেকে রাসুল আসেনি, যারা তোমাদের কাছে তোমাদের প্রতিপালকের আয়াত পাঠ করত এবং এই দিনের সাক্ষাৎ সম্পর্কে তোমাদের সতর্ক করত? তারা বলবে, অবশ্যই এসেছিল। বস্তুত অবিশ্বাসীদের প্রতি শাস্তির কথা বাস্তবায়িত হয়েছে। ’ (সুরা ঝুমার, আয়াত : ৭১)
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা চিৎকার করে বলবে, হে মালিক, তোমার প্রতিপালক যেন আমাদের নিঃশেষ করে দেন। সে বলবে, তোমরা এভাবেই থাকবে। ’ (সুরা জুখরুফ, আয়াত : ৭৭)। মহান আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে সঠিক ও সহি বুঝ দান করুন। আমিন।
+ There are no comments
Add yours