অনলাইন ডেস্ক॥
বঙ্গোপসাগর ও উপকূলবর্তী বিভিন্ন নদীতে এখন বছরে গড়ে প্রায় ১৬ বর্গকিলোমিটারের বেশি নতুন ভূমি জেগে উঠছে। গত চার দশকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে কয়েক হাজার বর্গকিলোমিটার নতুন ভূমি যুক্ত হয়েছে। ফলে এক একটি চর হয়ে উঠতে পারে এক একটি অর্থনৈতিক ক্ষেত্র!
গবেষকদের মতে, নতুন ভূমি বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের ১০ ভাগের ১ ভাগেরও বেশি। গত কয়েক দশকে উপকূলের চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কক্সবাজার, পটুয়াখালী, ফেনী, ভোলাসহ অন্যান্য উপকূলীয় জেলায় আনুমানিক ১০ হাজার বর্গকিলোমিটারের নতুন ভূমি জেগে উঠেছে।
অনেক আগেই নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে ওঠে নিঝুম দ্বীপ, স্বর্ণ দ্বীপ, ভাসানচরসহ আরো অনেক দ্বীপ।
এ ছাড়া নতুন ভূমিতে কৃষিকাজ ও মাছ চাষের সম্ভাবনাকেও কাজে লাগানো যেতে পারে। প্রতিটি চর ও দ্বীপকে ঘিরে পর্যটন শিল্পের বিকাশের কথা বিবেচনা করতে হবে।
২০১৩ সালে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ১৯৭১ থেকে ২০১০ পর্যন্ত বিভিন্ন উপকূলীয় অংশে প্রায় ৬ হাজার বর্গকিলোমিটার নতুন ভূমি জেগে উঠেছে।
হাতিয়ায় জেগে ওঠা স্বর্ণদ্বীপের আয়তন একটি উপজেলার আয়তনের সমান! স্বর্ণদ্বীপের প্রায় ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ভাসানচর। ভাসানচরের আয়তন প্রায় ২৫০ বর্গকিলোমিটার। ভাসানচরের দেড় কিলোমিটার দক্ষিণে প্রায় ১০০ কিলোমিটার বিশাল আয়তনের গাঙ্গুরিয়া চরের অবস্থান।
এ ছাড়া হাতিয়ার দক্ষিণে আরো বেশ কয়েকটি চর জেগে উঠেছে। এগুলো হলো- পশ্চিমে ঢাল চর, চর মোহাম্মদ আলী, সাহেব আলীর চর, চর ইউনুস, চর আউয়াল, মৌলভীর চর, তমরদ্দির চর, উত্তরে নলের চর, জাগলার চর, কেয়ারিং চর, জাহাইজ্জার চর ইত্যাদি। এ ছাড়া ৩০-৪০টির বেশি ডুবোচর যেগুলো ভাটার সময় জেগে ওঠে এবং জোয়ারের সময় ডুবে যায় সেসব রয়েছে, অথবা যেগুলো জেগে ওঠার অপেক্ষায় রয়েছে। হাতিয়ার কোনো কোনো চরে জনবসতি গড়ে উঠেছে। শুরু হয়েছে চাষাবাদ। সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীর আশপাশেও ছোট ছোট চর জেগে উঠেছে।
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের ১৫০ বর্গকিলোমিটারের দ্বীপকে ঘিরে চারপাশে নতুন ভূমি গড়ে উঠেছে এর দ্বিগুণ। এ ছাড়া মেঘনা নদীর পাড় ঘিরে বিভিন্ন সময় সৃষ্টি হওয়া আরো ৬০টির বেশি চর জেগে ওঠার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সে হিসাবে সব মিলিয়ে আগামী দুই দশকে বর্তমান বাংলাদেশের অর্ধেক পরিমাণ নতুন ভূমি পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে!
জেগে ওঠা এসব নতুন চরে বসতিহীন প্রান্তিক মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই দেওয়ার পরিকল্পনা করা যেতে পারে। জেগে ওঠা চরগুলোকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করতে ক্রসড্যাম বা আড়াআড়ি বাঁধ তৈরির পরিকল্পনা করতে হবে।
+ There are no comments
Add yours