অনলাইন ডেস্ক॥
বনমোরগ বা বনমুরগি পাহাড় বা বনের বিলুপ্ত প্রজাতির খুবই চালাক পাখি। যা গৃহপালিত দেশীয় মোরগ-মুরগির আদি বংশধর হিসেবে গণ্য। দেখতে দেশীয় মোরগ-মুরগির চেয়ে সুন্দর ও আলাদা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। আর তাই চাহিদা অনুযায়ী সংখ্যা কম হওয়ায় স্থানীয় বাজারে এর চাহিদা বেশি।
বান্দরবান সদর উপজেলার রাজবিলা ইউনিয়নের মেওয়া পাড়া এলাকার হ্লা শোয়ে অং মারমা গড়ে তুলেছেন বন মোরগের খামার।
শোয়ে অং মারমা বলেন, ‘প্রায় ৫ বছর আগে পাহাড়ে জুম কাটতে যাওয়ার সময় তিনি ৬-৭টি ডিমসহ একটি বনমুরগির বাসা দেখতে পান। সেখান থেকে তিনটি ডিম নিয়ে এসে ঘরে তা নিজ ঘরে দেশি মুরগির বাসায় রেখে দেন। সেখান থেকে ১টি ডিম নষ্ট হয়ে যায় আর দুটো ডিম থেকে একটি মোরগ-একটি মুরগির বাচ্চা ফোটে। এরপর দেশি মুরগির সঙ্গে বড় হতে থাকে।
একসময় তিনি বুঝতে পারেন, দেশি মুরগির খাদ্যাভ্যাস ও বনমোরগের খাদ্যাভ্যাসে পার্থক্য আছে। তখন থেকে তিনি আলাদাভাবে ঘাসফড়িং, পোকামাকড়, ধানের দানা জাতীয় খাবার খাওয়ানো শুরু করেন বনমোরগকে। এমনকি গাছ ও লতা-পাতা দিয়ে অনেকটা বনের পরিবেশ তৈরি করে আবাসন সৃষ্টি করেন। সেই থেকে বংশ বৃদ্ধি হয়ে আজ বিশাল বনমোরগের খামারে পরিণত হয়েছে।
বর্তমানে তার খামারে দেড়শ’রও বেশি বনমোরগ বা বনমুরগি আছে। এর মধ্যে ২২টি ডিম দেওয়ার উপযোগী, ১৩টি মোরগ, ২টি শিকারী মোরগ , বাচ্চা ও তা দেওয়া মুরগি আছে। স্থানীয়দের মধ্যে এ মোরগের বেশ চাহিদা থাকায় পরিপক্ব মোরগ প্রতিটি তিন হাজার টাকা, মুরগি প্রতিটি ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ বছর ৮টি মুরগি ও ৫টি মোরগ বিক্রি করেছেন। আরও অর্ডার আছে বলে জানান শোয়ে অং মারমা। ওজনের পরিমাণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওজন দেশি মুরগির মতো নয়। এদের সাইজ দেশি মুরগির তুলনায় ছোট এবং ওজন কম। পরিপক্ব মোরগের ওজন সর্বোচ্চ ৭০০-৮০০ গ্রাম হয়। আর মুরগির ওজন হয় ৬০০-৭০০ গ্রাম।’
বান্দরবান বনবিভাগীয় কর্মকর্তা বলেন, শোয়ে অং মারমা যেহেতু কোনোভাবে ডিম সংগ্রহ করে গৃহপালিত প্রাণীর সঙ্গে প্রতিপালন করছে, তাই তাকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের আওতায় আনা যায় না।’
+ There are no comments
Add yours