স্টাফ রিপোর্টার॥
মানিকগঞ্জের সিঙাইর উপজেলার ২৮ হাজার মানুষের গোবিন্দল ইউনিয়ন হচ্ছে বাংলাদেশের একমাত্র শতভাগ মুসলিম ধর্মের মানুষের গ্রাম।
গোবিন্দল গ্রামের ছোট বড় সবাই কোরআনে হাফেজ। এই গ্রামে মুসলিম ব্যতীত হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান বা অন্য কোন ধর্মের মানুষের বসতি নেই। এই গোবিন্দল গ্রামে মসজিদ বাদে অন্য কোন উপাসনালয়ও নেই। এমনকি গানবাজনাও নিষিদ্ধ সেখানে।
গ্রামবাসী জানান, একটা সময় এই এলাকায় মুসলমানদের সংখ্যা ছিলো খুবই অল্প পরিমাণে। কিন্তু তাদের সুন্দর আচার আচণের কারণে মুগ্ধ হয়ে অনেকেই ইসলামের সুশীতল ছায়া তলে আশ্রয় গ্রহন করেন। আর এভাবেই বাড়তে থাকে মুসলিমদের সংখ্যা। এরপর একটা সময়ের ব্যবধানে পুরো গ্রামটি মুসলমানদের গ্রাম হয়ে ওঠে। এই গ্রামটিতে ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। তারা বেশ ধর্মচর্চা সচেতন।
বিশেষ করে গ্রামের নারীরা এমনকি শিশুরা পর্যন্ত পর্দা করে থাকেন। নারীরাও বিশেষ প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যান, তবে তারা তখন বোরকা পড়েন আর ছোটরা হিজাব পরিধান করেন। অপরদিকে পুরুষরা মাথায় টুপি আর পাঞ্জাবি পরিধান করে চলাফেরা করেন। এরফলে এই এলাকায় ঢুকলে আপনার মনে হবে আপনি সৌদি আরবের কোন অঞ্চলে প্রবেশ করেছেন।
এই গোবিন্দল গ্রামের ছোট বড় সবাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে থাকেন। এবং পুরুষরা মসজিদে গিয়েই নামাজ আদায় করেন। শিশুদের বয়স সাত বছর হলেই তাদের নামাজ পরা বাধ্যতামুলক করা হয়। এই গ্রামের কোনো টেলিভিশন বা মাইকে বাজেনা কোন গান। তবে বাজে শুধু ওয়াজ আর ধর্মীয় আলোচনা। জানা যায়, কোনো বিয়ে বাড়িতে গান বাজানো হয় না। আর রমজান মাসজুড়ে বন্ধ রাখা হয় টেলিভিশন। শিশুরা দলবেধে যায় মাদরাসায়।
এই গ্রামে রয়েছে ৫টি মাদরাসা। এর মধ্যে মেয়েদের জন্য ৪টি আর ছেলেদের জন্য রয়েছে একটি মাদরাসা। গ্রামটিতে ৩২টি সমাজ ও ৩২ টি মসজিদ রয়েছে। ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের পর মসজিদে তালিমের ব্যবস্থা রয়েছে। এই গ্রামের সবাই কোরআন শিক্ষায় শিক্ষিত।
জনশ্রুতি রয়েছে, একবার এই গ্রামের এক মসজিদে একজন ভ্যান চালক নামাজ পড়ান। সে সময় তার সুমধুর কোরআন তেলাওয়া গ্রামবাসীকে বেশ আকৃষ্ট করে। তারই ধারাবাহিকতায় এই গ্রামের মানুষ দ্বীনের প্রতি পরিপূর্ণভাবে আসতে শুরু করে।
+ There are no comments
Add yours