রুদ্র মোহাম্মদ ইদ্রিস
***
আমরা এখনো গ্রামকে আমাদের শেকড় বলি। গ্রাম হলো এমন জায়গা যেখানে এখনও মানুষ মানুষকে ভালোবাসে, একে অন্যের খোঁজ খবর নেয়। গ্রামেই মাটির স্পর্শ মেলে-মাটির শরীরে। প্রাণের দেখা মেলে-প্রাণের মিলনমেলায়। মমতার হাতগুলো পুঁইয়ের লতার মতো দীর্ঘ আর চাল কুমড়া কিংবা ইরি চালের মতো মেদবহুল হয়। প্রতিটি মানুষের জীবনে একটা ছোট্ট গ্রাম থাকে। কিন্তু সবাই সেই গ্রামের দিকে ইতিবাচকভাবে তাকাতে পারে না। এর পেছনেও রয়েছে নানান কারণ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিভৃতচারী কবি-লেখক মোবারক হোসেন তাকাতে পেরেছিলেন। তাঁর তৃতীয় নয়ন এখনো বেশ চঞ্চল। যেনো বা ষোলোর ঘরে পা রাখা এক কিশোরী। যে কিনা এইমাত্র ফ্রক ছেড়ে শাড়ি জড়িয়েছে তার লাবণ্যমাখা অঙ্গে। গ্রামের চিরচেনা দৃশ্য ও প্রকৃতি তাঁকে একাকার করেছে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় নাগরিকতার আলো যখন ধীরে ধীরে গ্রাস করতে থাকে গ্রাম ও গ্রামীণ জনপদকে। ঠিক তখনই কবি মোবারক হোসেন লিখেছেন তাঁর কবিতার বই মইন গ্রামের গল্প। বইটি এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। ১৯৫৫ সালের ০১ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মইন্দ গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন আমাদের কবি মোবারক হোসেন। সম্প্রতি তাঁর দুইটি কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে। মইন গ্রামের গল্প ও অমীমাংশিত আত্মকথা। বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু তাঁর প্রিয় সাবজেক্ট। ৭ মার্চের ভাষণ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সব স্মৃতি এখনো তার মননে মগজে জীবন্ত। এক অজানা কারণে নিজেকে নিভৃতচারী করে রেখেছেন। ঘর থেকে তেমন একটা বের হোন না। হয়তো বা অভিমানের অদৃশ্য পর্দা ঘিরে রেখেছে তার মনোভুমিতে। জানা নেই কীসের অভিমান তার বুকে এখনো জমাট বরফ। প্রায়শই তাঁর পূর্ব মেড্ডাস্থ ফসল বাড়িতে যাই। দেখা ও কথা হয়। বেশ জ্ঞানগর্ভ আলোচনা হয় তাঁর সাথে। নীরব থাকতে পছন্দ করেন। কাউকে ভালোবেসে বিরক্ত করতে চান না এই কবি।
+ There are no comments
Add yours