মাই ছাউ: ভিয়েতনামের এই গ্রাম যেন স্বর্গের টুকরা!

Estimated read time 1 min read
Spread the love

অনলাইন ডেস্ক॥
দেশে ছেড়ে এখন মানুষ বিদেশে ঘুরতে যেতে বেশি পছন্দ করেন। বিদেশে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলে সুপরিচিত জায়গার বদলে ঘুরে আসতে পারেন ভিয়েতনামের মাই ছাউ থেকে। সবুজে ঘেরা পাহাড়, ধাপ কাটা সুদৃশ্য চা-বাগান, সোনালি ধানের খেত একবার দেখলে চোখের পাশাপাশি মনও জুড়িয়ে যাবে, নিশ্চিত।

মাই ছাউ, ভিয়েতনামের এই গ্রাম যেন এক টুকরো স্বর্গা! ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয় থেকে মাই ছাউ গ্রামে যেতে সময় লাগে ৩ ঘণ্টা। মে থেকে জুন মাস এবং সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস হল মাই ছাউ এলাকা ঘোরার সবচেয়ে ভালো সময়। এই সময়ই ধান পাকে, আর তাই যেদিকেই চোখ যাবে, সোনালি-হলুদ রং চোখ ধাঁধিয়ে দেবে।

মাই ছাউয়ের প্রধান পর্যটনস্থল হলো লাক গ্রাম। সেখান থেকে চলে যেতে পারেন থুঙ খে পাসে। এই জায়গাটিকে দা ট্রাং মাউন্টেন পাসও বলা হয়। দা ট্রাং শব্দের অর্থ সাদা পাথর। সাদা চুনাপাথর দিয়ে তৈরি পাহাড়ে ঘেরা বলেই এমন নামকরণ। মনে হয়, পুরো এলাকাটি অবিকল যেন সাদা তুষারে ঢাকা।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০০০ মিটার উচ্চতায় থুঙ খে পাসের উপর থেকে পুরো উপত্যকাটি দেখা যায়। সবুজ পাহাড়, ধান খেতে ঢাকা ছোট ছোট বাড়ি, সবটাই দেখা যায় পাখির চোখে। ছোট্ট একটি বাজারও রয়েছে এই এলাকায়, যেখানে বিভিন্ন রকম স্থানীয় খাবার চেখে দেখার সুযোগ মিলবে।

আপনি যদি স্থানীয়দের জীবনযাপন আরও কাছ থেকে দেখতে চান, তাহলে চলে যেতে হবে হাং কিয়া এবং পা কো-তে। হোয়া বিন প্রদেশে এই দুটি মাত্র গ্রামেই হমং প্রজাতির মানুষের বাস। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৫০০ মিটার উচ্চতায় এই গ্রামগুলো সারা বছরই পেঁজা তুলোর মতো মেঘে ঢাকা থাকে। দেখলে মনে হবে, যেন মেঘেদেরই স্বর্গরাজ্য সেগুলো। বাঁশ এবং কাঠ দিয়ে তৈরি বেশ কিছু ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে সেখানে, যেগুলোতে উঠলে মেঘের সমুদ্রে ভেসে বেড়ানোর অনুভূতি মিলবে।

পা কো-তে রয়েছে একটি বাজার, যেখানে স্থানীয়দের তৈরি পোশাকের সম্ভার চোখ ধাঁধিয়ে দেবে। এই বাজারটি বসে শুধুমাত্র রবিবার, ভোর ৫টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত।

জঙ্গল এবং পাহাড়ে ঘেরা হোয়া বিন লেকে কায়াকিংয়েরও সুযোগ রয়েছে। একটা গোটা দিন প্রকৃতির কোলে শুধু এভাবেই কাটিয়ে দেওয়া যায়। এছাড়া ঘুরে আসতে পারেন পু লুয়ং নেচার রিজার্ভ থেকে। সেখানে শীতল জলের ঝর্নায় গোসল করলে শরীর, মন দুইই মুহূর্তে চনমনে হয়ে উঠবে।

মাই ছাউতে থাকার জায়গার অভাব নেই। লাক এবং পম কুং গ্রামে একাধিক হোমস্টে রয়েছে, যেখানে স্থানীয় থাই, হমং এবং ডাও পরিবারগুলোর আতিথেয়তায় মন ভরে যাবে। এছাড়া একাধিক বিলাসবহুল রিসোর্টও রয়েছে। রয়েছে বাজেট ফ্রেন্ডলি থেকে শুরু করে একাধিক হাই-এন্ড বাংলোও, যেগুলো থেকে ধানক্ষেত, চুনাপাথরের পাহাড় এবং ঘন সবুজ জঙ্গলের ভিউ পাওয়া যাবে। এছাড়া বাজেট কম থাকলে শেয়ার-হোস্টেলও রয়েছে, যেখানে বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা এসে থাকেন।

মাই ছাউতে ঘোরার সেরা বাহন হল সাইকেল। জমির আলপথ বেয়ে প্যাডেলে চাপ দিয়ে চলতে শুরু করলে বাংলার গ্রামে থাকার অনুভূতি পাওয়া যাবে। সাইকেল ভাড়া পাবেন হোমস্টে কিংবা হোটেল থেকেই। এছাড়া স্থানীয় ই-রিকশাও রয়েছে যেগুলোতে চড়ে অল্প সময়ে এবং অল্প খরচে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যাওয়া যায়।

কী খাবেন
মাই ছাউতে গেলে স্থানীয় খাবার কম লাম চেখে দেখতে ভুলবেন না। এটি আর কিছুই নয়, ফাঁপা বাঁশে সিদ্ধ করা চটচটে ভাত, সঙ্গে থাকে অন্য উপকরণও। এছাড়া বন্য মৌমাছি এবং গ্যাঁজানো নরম বাঁশও স্বাদে অতুলনীয়। তবে এই দৃষ্টি চেখে দেখতে গেলে গ্রীষ্মকালে যেতে হবে মাই ছাউতে। জুলাই মাসের শেষে ভাঙা হয় মৌচাক। তারপর বুড়ো মৌমাছিদের বের করে এনে ভিজিয়ে রাখা হয় ওয়াইনে। আর তরুণ মৌমাছিদের নরম বাঁশের সঙ্গে ভাজা হয় ছাঁকা তেলে।

সূত্র: দ্য ওয়াল

About The Author


Spread the love

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours