বিশেষ প্রতিনিধি॥
প্রতি কেজি গরুর মাংস যেখানে ৮০০ টাকার ওপরে বিক্রি হতো, এখন সেই মাংস বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কমে মাত্র ৬০০ টাকায়। বিক্রেতারা বলছেন, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমছে, গরুর উৎপাদন বেড়েছে, উৎপাদন এবং পরিবহন খরচ কমেছে ও চর্বিযুক্ত মাংস বিক্রি করায় কম দামে বিক্রি সম্ভব হচ্ছে।
রাজধানীর রায়েরবাগ বাজারের একজন গোস্ত বিক্রেতা বলেন, আগে ৮০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করার পর সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতিদিন দেড় থেকে ২ হাজার টাকা লাভ হতো। এখন প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে। কম দামে বিক্রি করার কারণ কানতে চাইলে, তিনি জানান, এখন প্রতি কেজি গরুর মাংসের সঙ্গে চর্বি ও মাথার মাংস যুক্ত করে দেওয়া হয়। আগে দাম বেশি থাকায় মানুষ কম গরুর মাংস কিনত। এখন দাম কমায় বেশি মানুষ বেশি মাংস কিনছে।
খামারিরা বলছেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে গো-খাদ্যের দাম বেড়ে গিয়েছিল। সে সময় থেকে নিজস্ব তত্ত্বাবধানে তারা হাইব্রিড ঘাস উৎপাদন শুরু করায় এখন গরু লালন-পালনের খরচ অনেকটা কমে এসেছে। যার প্রভাব পড়ছে বাজারে। দানাদার খাদ্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমে যাওয়ায় এখন প্রতিটি গরু তারা সাত থেকে আট হাজার টাকা কমে বিক্রি করতে পারছেন। খামারিরা বলেন, গরুর মাংসের চাহিদা কমে যাওয়ার পর গত কয়েক মাসে গরুর খাবারের দামও অনেকটাই কমেছে। খামারিদের উৎপাদন খরচ কমায় তারা কম দামে বাজারে গরু ছাড়ছেন। বাজারে যে পরিমাণ চাহিদা তার চেয়ে বেশি জোগান হওয়ার কারণে গরুর দাম কমছে। বিক্রেতারা বলছেন, রাজধানীর যেসব এলাকায় সীমিত আয়ের মানুষ বেশি থাকেন, সেসব এলাকায় গরুর মাংসের দাম বেশি কমেছে। আগে বিক্রি কমে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখন দাম কমিয়ে দেওয়ায় বিক্রি বেড়েছে। অনেক ব্যবসায়ী কম দামে গরুর মাংস বিক্রি করা শুরু করেন। জানা গিয়েছে, গত দেড় বছর ধরে গরুর মাংস সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গিয়েছিল। তার ওপর অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে গরুর মাংস বিলাসী খাবার হিসেবে খাদ্য তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গরুর মাংস কমে যাওয়ায় অর্থাৎ কোথাও ৫৮০ আবার কোথাও ৬০০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস বিক্রি হওয়ায় একদিকে বেড়েছে বিক্রি অন্যদিকে বেড়েছে মানুষের মাংস ক্রয়ের আগ্রহ।
যে কারণে গরুর মাংস ৮০০ থেকে ৬০০ টাকায় নামলো!

+ There are no comments
Add yours