রুদ্র মোহাম্মদ ইদ্রিস॥
এখানকার প্রায় শতভাগ মানুষ কোটিপতি। কারণ কুয়েতের জিডিপি ৭২ হাজার মার্কিন ডলার। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মুদ্রার মধ্যে কুয়েতি দিনার অন্যতম। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে পঞ্চম অবস্থান তাদের। মজার ব্যাপার হলো সবারই ব্যাক্তিগত গাড়ি রয়েছে। অনেক সময় ভিক্ষুকদেরকেও গাড়িতে চড়ে এসে ভিক্ষা করতে দেখা যায়। তারা অনেক দামি দামি জিনিস ব্যবহার শেষে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে দেয়। টিভি ফ্রিজ এমনকি গাড়ি ও দামি মোবাইল ফোন।
এখানকার মুদ্রার মান পৃথিবীর যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি। বলছিলাম কুয়েতের কথা। এই দেশে আজানের সময় নাচ, গান, খাওয়া দাওয়াসহ সমস্ত কাজ কর্ম বন্ধ এবং তা নিষিদ্ধ। জানলে অবাক হবেন-কুয়েতে প্রাকৃতিক পানির ব্যবস্থা নেই। এ কারণে তারা অপরিশোধিত পানিকে ওয়াটার ডি নাইজেশান পদ্ধতিতে পান করার উপযোগী করে নেয়। শুনে অবাক হবেন, এখানকার এক বোতল পানীয় জলের দাম এক লিটার তেলের চেয়ে অনেক বেশি।
কুয়েতে ঈগল সব যায়গায় দেখা যায়। তাই এখানকার মুদ্রাতেও ঈগলের ছবি আছে। কুয়েতে চাষাবাদ হয় না বললেই চলে। কারণ সেখানে মাত্র ১ ভাগ চাষ যোগ্য জমি আছে। দেশটির ৪২ ভাগ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। কুয়েতের রাজধানীতে ৪ লাখ মানুষ বসবাস করে। ছোট্ট একটি আরব দেশ কুয়েত, ৯টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত। পশ্চিম এশিয়ার এ দেশটির অবস্থান আরবের উত্তরাঞ্চলে, পারস্য উপসাগরের প্রান্তে। ইরাক ও সৌদি আরবের সঙ্গে এর সীমান্ত রয়েছে। এ দেশটি স্টেট অফ কুয়েত নামেও পরিচিত। কুয়েতের কোনো নারী, কোনো বিদেশী পুরুষকে বিয়ে করতে পারে না।
১৯৬১ সালে ব্রিটিশের কাছে থেকে স্বাধীনতা পায় কুয়েত। ২০১৬ সালের হিসাব অনুসারে কুয়েতের মোট জনসংখ্যা ৪৩ লাখের কিছু বেশি। এর মধ্যে কুয়েতি ১৩ লাখ, আর বিদেশি ৩০ লাখ। অর্থাৎ কুয়েতের মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশই বিদেশি। কুয়েতে প্রথম তেলের খনি পাওয়া যায় ১৯৩৮ সালে। দেশটিতে ১৯৪৬ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত অবকাঠামো খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়।
কুয়েতের ৯০ ভাগ আয় আসে তেল থেকেই। বর্তমানে অর্থনৈতিকভাবে কুয়েত অত্যন্ত শক্তিশালী। বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহৎ তেলের মজুদ রয়েছে দেশটিতে।
এদেশের মানুষ ব্যায়াম করে না। এজন্য তাদেরকে অলস বলা হয়। আর এজন্যই কুয়েতকে বলা হয় মোটা মানুষের দেশ। দেশটিতে প্রচুর গরমে এখানকার তাপমাত্রা ৫৩ ডিগ্রিতে পৌঁছালে অনেককেই সেসময় রাস্তায় ডিম ভাজতে দেখা যায়।
কুয়েত পৃথিবীতে একমাত্র দেশ যেখানে গরমের কারণে জাতীয় দিবস পাল্টাতে হয়েছে। ১৯৬২ সাল পর্যন্ত ১ জুন জাতীয় দিবস পালন করত। ১৯৬২ পর ২৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় দিবস পালন করা হয়। কুয়েতের অফিসিয়াল ভাষা আরবি। এখানে ভোটের মাধ্যমে পার্লামেন্ট গঠিত হয়। ২০০৫ সাল থেকে কুয়েতে নারীদের নির্বাচন লড়ার অধিকার সুনিশ্চিত হয়।
+ There are no comments
Add yours